ইরানের হামলার প্রতিবাদে ইসরাইল কী পদক্ষেপ নেবে তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তেল আবিব। রোববার (১৪ এপ্রিল) যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক বসলেও মেলেনি কোনো সমাধান।শনিবার স্থানীয় সময় রাতে ইসরাইলে আঘাত হানে ইরানের শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র। সিরিয়ায় থাকা নিজেদের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালায় তেহরান। এই ইস্যুতে বেশ উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গন।
এই হামলায় তেহরান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দাবি করলেও ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমান ঘাঁটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত এবং এক শিশু গুরুতর আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে তেল আবিব।হামলার প্রতিবাদে হামলা হবে কি না, এ নিয়ে রোববার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকে ইসরাইল। সেখানে তেল আবিবের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈঠক।সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের হামলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলি কোনো পাল্টা হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না। বাইডেন নেতানিয়াহুকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে ইসরাইলের পাল্টা হামলার বিরোধিতা করবে।
তবে ইরানে ইসরাইলি পাল্টা আক্রমণের বিরোধিতা করলেও দেশটির বিরুদ্ধে তেল আবিবের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে সমর্থন দেয়ার কথা পুনরায় ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।এদিকে ইসরাইল যদি পাল্টা হামলার পরিকল্পনা করে তবে তেল আবিবে আরও বড় আক্রমণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান। এছাড়া ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া সমর্থন করা উচিত নয় বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।রোববার এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, যদি ইসরাইল ও তার সমর্থকেরা বেপরোয়া আচরণ করে, তবে তারা এর শক্তিশালী জবাব পাবে।
প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, ‘গত রাতে ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড কোর তথা আইআরজিসির উদ্যমী ও সাহসী সন্তানরা দেশের সব প্রতিরক্ষা এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে ইরানের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করেছে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলকে একটি চরম শিক্ষা দিয়েছে।ইসরাইলে ইরানের হামলাকে ‘বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন মেনে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার স্বাভাবিক অধিকার থেকেই আইরজিসি শনিবার গভীর রাতে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে রোববার ইসরাইলের অনুরোধে জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস তেল আবিবে তেহরানের হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এই শত্রুতা শেষ করার আহ্বান জানান।তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য এখন খাদের কিনারে। এছাড়াও, শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিশোধ নেয়া জাতিসংঘের আইনে নিষিদ্ধ বলেও জানান গুতেরেস।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি রবার্ট এ উড বলেন, এরপর ইরান যদি ইসরাইল বা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালায় তবে এর জন্য দায়ী থাকবে শুধুমাত্র ইরান নিজেই।এক দীর্ঘ বক্তৃতায় ইসরাইলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি গিলাদ এরদান আশা প্রাকশ করেন, জাতিসংঘ ইরানের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। এছাড়াও তিনি ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পস কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার দাবিও জানান।
আপনার মতামত লিখুন :