বাংলাদেশ সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ। ছবি: সংগৃহীত

রাঙ্গামাটি জেলা, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি একটি পার্বত্য জেলা, বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা. এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ের দৃশ্য, নদীর কিনারা, ঝর্ণা, বৌদ্ধ বিহার, ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ি, চাকমা রাজার রাজবাড়ি, এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থান দৃশ্যমান।  রাঙ্গামাটি জেলায় থাকতে হলে, তবে পর্যটন মোটেল একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

কেন যাবেন রাঙামাটি? 

রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের একটি অনন্য পার্বত্য জেলা, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় জনপদ এবং সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। প্রাকৃতিক রূপ-বৈচিত্র্য-রাঙ্গামাটি তার পাহাড়, নদী, লেক এবং ঝর্ণার জন্য পরিচিত। এখানে প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী যে কাউকে মুগ্ধ করতে পারে।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য: এখানে চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্‌, পাংখোয়া, লুসাই, সুজে সাওতাল, রাখাইন সহ ১৪টি জনগোষ্ঠির বসবাস এবং তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ধারা রয়েছে দর্শনীয় স্থানসমূহ: রাঙ্গামাটির কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে, কর্ণফুলী হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, শুকনাছড়া ঝর্ণা, ধুপপানি ঝর্ণা, মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, রাইংখ্যং পুকুর, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি ইত্যাদি অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। শীতকাল পাহাড় ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। এই সময়ে রাঙ্গামাটির প্রকৃতি আরও নবীন এবং মনোরম হয়ে ওঠে।

ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায়

বাস: ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যেতে পারেন বাসে। বাসে যাতায়াত করার সবচাইতে সহজ এবং বাসে যাতায়াত এর ক্ষেত্রে ভাড়া টা অনেক কম লাগে যার কারণে মানুষ বাসে যাতায়াত টা বেশি পছন্দ করে।

ট্রেন: ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যেতে পারেন ট্রেনে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ট্রেনে যাওয়ার পর, চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটি যেতে পারেন বাসে।

গাড়ি: নিজস্ব গাড়ি অথবা ভাড়া করা মাইক্রো, কার, ক্যাব নিয়েও রাঙ্গামাটি যেতে পারবেন।

রাঙামাটির পর্যটন স্পট সমূহ

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। ছবি: সংগৃহীত

রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু:রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু পর্যটনপ্রেমী মানুষের কাছে রাঙ্গামাটি জেলার একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই সেতু, যা কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত, রাঙ্গামাটি শহরের প্রধান আকর্ষণ। এটি সাধারণত রাঙ্গামাটি গিয়ে দেখা যায় এবং এটি রাঙ্গামাটির সিম্বল হিসেবে পরিচিত।

ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই লেকের বিচ্ছিন্ন দুই পাড়ের পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ গড়ে দিয়েছে। এই সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই লেকের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। সেতুটি পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি আপনাকে এনে দেবে রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চারের অনুভূতি। ব্রিজের এক পাশে পাহাড়ের উপর রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য দোলনা, স্লিপার ইত্যাদি। লেকে ভ্রমণের জন্য ব্রিজের নিচে ইঞ্জিন চালিত বোট ঘন্টা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় ভাড়া পাওয়া যায়। ঝুলন্ত ব্রিজে প্রবেশের জন্য পর্যটন কর্পোরেশনকে জনপ্রতি ২০ টাকা ফি দিতে হয়। বর্ষায় অতি বৃষ্টি হলে অনেক সময় ঝুলন্ত ব্রিজের উপর পানি উঠে যায়, তাই সেইসময় ঝুলন্ত ব্রিজের উপরে যাওয়া না উচিত।

রাঙামাটি, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা, প্রাকৃতিক রূপ-বৈচিত্র্যে খ্যাতি পেয়েছে। এখানে পাহাড়, নদী, লেক, ঝর্ণা, বৃক্ষবন্ধু, সবুজ পাহাড়, পাহাড়ি ঝরনাধারা, স্বচ্ছ জলরাশি, হ্রদ, বৃক্ষ কাটা ঝর্ণা, প্রাকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের মনে দোলা দেয় এই জেলা। 

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে। ছবি: সংগৃহীত

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে: এটি একটি প্রাকৃতিক জলরাশি।কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম জলাধার। এটি কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত হয়েছে। এই কেন্দ্রে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট। পানি সংকটের কারণে সব ইউনিট চালু করা যাচ্ছে না, তবে একটি ইউনিট চালু আছে যা থেকে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত আছে। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়াতে পারে শুধু বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে। তাই বন্ধ হয়ে যাবে নৌ যোগাযোগ এবং মৎস্য আহরণকারী কেন্দ্র ফিসারি।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
কর্ণফুলী হ্রদ । ছবি: সংগৃহীত

কর্ণফুলী হ্রদ: কর্ণফুলী হ্রদ বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম জলাধার। এটি কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত হয়েছে। এই কেন্দ্রে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট। পানি সংকটের কারণে সব ইউনিট চালু করা যাচ্ছে না, তবে একটি ইউনিট চালু আছে যা থেকে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত আছে। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়াতে পারে শুধু বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে। তাই বন্ধ হয়ে যাবে নৌ যোগাযোগ এবং মৎস্য আহরণকারী কেন্দ্র ফিসারি।

পর্যটন মোটেল:রাঙামাটি জেলায় পর্যটন মোটেলের অনেক সুন্দর স্থান রয়েছে। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ের দৃশ্য, নদীর কিনারা, ঝর্ণা, বৌদ্ধ বিহার, ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ি, চাকমা রাজার রাজবাড়ি, এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থান দেখ। পর্যটন মোটেলে আপনি আপনার পর্যটন অভিজ্ঞতা উন্মুক্ত করতে পারেন। আপনি যদি রাঙামাটি জেলায় থাকতে চান, তবে পর্যটন মোটেল একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।  ও ঝুলন্ত সেতু:

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
 সুবলং ঝর্ণা । ছবি: সংগৃহীত

সুবলং ঝর্ণা: সুবলং ঝর্ণা বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উঁচু পাহাড়ি ঝর্ণা। এটি কাপ্তাই হ্রদের কোল ঘেঁষে কর্ণফুলী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত জলরাশির ঝর্ণা। নৌপথে সুবলং বাজার যাওয়ার আগে এই ঝর্ণাটির দেখা মিলে। এখানে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে হাজারো পর্যটকের সমাগম ঘটে। সুবলং ঝর্ণায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের কিছু স্থাপনা ও খাবারদাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ঝর্ণায় প্রবেশ করতে দর্শনার্থীদের টিকেট কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। রাঙ্গামাটি সদর হতে সুবলং ঝর্ণার দুরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে সুবলং ঝর্ণায় খুব সামান্য পরিমাণে পানি থাকে, তবে তীব্র খরা মৌসুমে ঝর্ণার পানি একেবারেই শুকিয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে সুবলং ঝর্ণার জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আঁছড়ে পড়ে কাপ্তাই হ্রদের জলে গিয়ে মিশে যায়।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
শুকনাছড়া ঝর্ণা  । ছবি: সংগৃহীত

শুকনাছড়া ঝর্ণা: শুকনাছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উঁচু পাহাড়ি ঝর্ণা। এটি কাপ্তাই হ্রদের কোল ঘেঁষে কর্ণফুলী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত জলরাশির ঝর্ণা। পাহাড় আর সবুজ বুনো জঙ্গলের মাঝে আঁকা বাঁকা পাহাড়ের ভাঁজ দিয়ে বয়ে চলে ঝর্ণা জল।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
ধুপপানি ঝর্ণা  । ছবি: সংগৃহীত

ধুপপানি ঝর্ণা: ধুপপানি ঝর্ণা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার একটি ঝর্ণা। এটি ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। স্থানীয় শব্দে ধুপপানি ঝর্ণা অর্থ সাদা পানির ঝর্ণা। ভূমি থেকে ধুপপানি ঝর্ণার উচ্চতা প্রায় ১৫০ মিটার। এই ঝর্ণার আসেপাশে রয়েছে হরিণ, বুনো শুকর, বনবিড়াল এবং ভাল্লুক সহ বেশ কিছু বন্য প্রাণী। প্রায় ২ কিলোমিটার দূর থেকে ধুপপানি ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ার শব্দ শোনা যায়।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
মুপ্পোছড়া ঝর্ণা। ছবি: সংগৃহীত

মুপ্পোছড়া ঝর্ণা:মুপ্পোছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বাঙ্গালকাটা নামক জায়গায় অবস্থিত। এটি একটি ঝরা থাকলেও প্রস্থের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় ঝর্ণা। দূর্গম পার্বত্য এলাকা হওয়ায় এখানে অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ে আছে প্রচুর ঝর্ণা। প্রায় ৩০০ ফিট উপর থেকে বেয়ে নেমে আসা স্বচ্ছ জল নিখাদ মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দেয় মন জুড়ে।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
পেদা টিং টিং । ছবি: সংগৃহীত

পেদা টিং টিং: পেদা টিং টিং বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি শহরে কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত ভাসমান পাহাড়ে অবস্থিত একটি পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র। এটি একটি চাকমা শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ হচ্ছে “পেট টান টান”। অর্থাৎ, মারাত্মকভাবে খাওয়ার পর পেটের যে টান টান অবস্থা থাকে, সেটাকেই বলা হয় পেদা টিং টিং।রাঙ্গামাটি শহর থেকে মাত্র ৪-৫ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই হ্রদের ভসমান এই পেদা টিং টিং অবস্থিত। এখানে একটি সেগুন বাগান রয়েছে, যেখানে সারি সারি সেগুন গাছের সাথে রয়েছে কিছু বনের পশু পাখি। এখানে আপনি স্থানীয় খাবার “বিগল বিচি”, “কচি বাঁশের তরকারী”, “কেবাং” খেতে পাবেন। এখানে রেস্তোরা, কটেজ, নৌবিহার ব্যবস্থা, সেগুন বাগান ও অসংখ্য বানর রয়েছে। আপনি চাইলে রাত্রিযাপনও করতে পারবেন। এখানে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি কক্ষ সদৃশ ঘর রয়েছে।

টুকটুক ইকো ভিলেজ: টুকটুক ইকো ভিলেজ রাঙ্গামাটি শহর থেকে টুকটুক ইকো ভিলেজে যাওয়ার জন্য শহরের রিজার্ভ বাজারের শহীদ মিনার এলাকা থেকে রয়েছে নিজস্ব বোটের ব্যবস্থা। এই প্রাকৃতিক ভ্রমণ স্পটে আপনি পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। টুকটুক ইকো ভিলেজে আপনি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকতে পারেন এবং স্থানীয় জীবনের অভিজ্ঞতা অনুভব করতে পারেন।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
রাইংখ্যং পুকুর । ছবি: সংগৃহীত

রাইংখ্যং পুকুর: এটি একটি পুকুর। রাইংখ্যং পুকুর বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক পুকুর। এটি বিলাইছড়ি-ফারুয়া হয়ে এখানে যোগাযোগ করা অত্যন্ত কষ্টকর, কিন্তু যদি কেউ চাইলে পায়ে যেতে পারে। এই পুকুরের সৌন্দর্য অত্যন্ত মনমোহক। পানির প্রবাহ একটু বেশি হলে অপরূপ সুন্দর লাগে। ট্রেইল শেষ করতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। মোটামুটি সহজ এই ট্রেইলের শুরুতে গ্রামের কাদা রাস্তা ধরে ১ ঘণ্টা হেটতে হয়। তারপর ঝিরিপথ ধরে এগুলে সেই কাঙ্ক্ষিত ঝর্ণা। রাঙ্গামাটি জেলার সর্বোচ্চ পর্বত ও দেশের ১০০০ মিটারের অধিক উচ্চতার ৩ টি পর্বতের মধ্যে এটি একটি।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
রাজবন বিহার  । ছবি: সংগৃহীত

রাজবন বিহার: এটি একটি বৌদ্ধ বিহার।রাজবন বিহার বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উপাসনালয় কেন্দ্র। এটি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত এবং স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য এটি অন্যতম বৃহত্তম পর্যটন আকর্ষণ। এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। চিন্তাপ্রচারক ও ধর্ম-দার্শনিক বৌদ্ধধর্মীয় ধর্মগুরু শ্রদ্ধেয় বনভান্তে ১৯৭৭ সালে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে রাঙ্গামাটিতে আসেন। বনভান্ত ও তাঁর শিষ্যদের বসবাসের জন্যে এই রাজবন বিহারটি নির্মান করা হয়। মঠটি বানভান্তে, মহান ধর্মীয় দার্শনিক এবং তাঁর শিষ্যের জন্য নির্মিত হয়েছিল। রাজবন বিহার এমন প্রকৃতিপ্রেমীদেরও আকর্ষণ করে যারা জ্ঞান এবং নির্মলতা পেতে চায়। আপনি রাঙ্গামাটি জেলা শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে রাজবন বিহারে পৌঁছতে পারেন। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট থেকে জলপথে এবং স্টেডিয়ামের পাশ্ববর্তী সড়ক পথে পাঁচ মিনিটেই বিহারে পৌঁছানো যায়।

রাঙ্গামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যময় জনপদ
ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি । ছবি: সংগৃহীত 

ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি:  ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার রাজনগর শহরে অবস্থিত। এই রাজবাড়ি চাকমা সার্কেলের ৫১তম চাকমা সার্কেল চিফ রাজা অর্থাৎ চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, তাঁর স্ত্রী ইয়েন ইয়েন ও মা আরতি রায় এই বাড়িতে থাকেন। রাজবন বিহারের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত এই রাজবাড়ি বাংলা নববর্ষের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ্ অনুষ্ঠিত হয়। চাকমাদের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানও এসময় চলতে থাকে। উপজাতীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির দেখা মিলবে এ সময়। প্রবেশ মূল্য নেই।

পরিশেষে, রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের একটি অনন্য পার্বত্য জেলা যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, এবং ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এখানের পাহাড়, লেক, ঝর্ণা, এবং বৌদ্ধ বিহারগুলো পর্যটকদের মন কাড়ে। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মিলনমেলা এই জেলাকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে। রাঙ্গামাটির পর্যটন স্থানগুলো যেমন কাপ্তাই লেক, ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, এবং চাকমা রাজার রাজবাড়ি প্রতিবছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করে। এই জেলার সৌন্দর্য এবং সংস্কৃতি বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে এক অমূল্য সম্পদ।

প্রথম সংবাদের খবর পেতে গুগল নিউজে ফলো করুন

Link copied!

সর্বশেষ :