বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগামীকাল চৈত্র সংক্রান্তি, জেনে নিন ৫টি তথ্য

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৪, ০৭:৫৪ পিএম

আগামীকাল চৈত্র সংক্রান্তি, জেনে নিন ৫টি তথ্য

চৈত্র মাসের শেষ দিন আগামীকাল শনিবার (১৩ এপ্রিল)। এই দিনটিকে চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে উদযাপন করা হয়।আবহমান বাংলার চিরায়ত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। এ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।

১. চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষদিন হওয়া এটি বাংলা বছরেরও শেষ দিন। এর পরদিনই অর্থাৎ রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ (১৪৩১) উদযাপিত হবে।বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।

 ২. চৈত্রসংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।হিন্দুশাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে- এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতিকে পুণ্যময় বলে মনে করা হয়। এক সময় চৈত্র সংক্রান্তিতেই এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎসব হতো। সংক্রান্তির দিন শিবের গাজন বা চড়ক পূজা এবং তার আগের দিন হতো নীল পূজা।

 ৩. চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।

 ৪. চড়ক হল চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব। এটি গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ। চড়ক পূজায় যোগদানকারী সন্ন্যাসীরা তান্ত্রিক সাধনার ফলে নিজেদের শারীরিক কষ্টবোধের ঊর্ধ্বে নিয়ে যান। ফলে তারাই চড়কের মেলায় নানা রকম শারীরিক কষ্ট স্বীকারে অগ্রণী হন। যেমন- অনেক উঁচু চড়ক গাছ থেকে পিঠে বঁড়শি গেঁথে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া, জিভ বা শরীরের কোনো জায়গায় লোহার শিক গেঁথে দেয়া বা ভাঙা কাচের টুকরোর ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, আগুনের খেলা দেখানো ইত্যাদি। তবে বর্তমানে এসব বিপজ্জনক কসরত অনেক ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়।

চড়ক উৎসব উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।

৫. এক সময় চৈত্র সংক্রান্তিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালন করতেন। কালক্রমে তা বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। চৈত্র থেকে বর্ষার শুরু পর্যন্ত সূর্য উত্তাপ যখন প্রখর থাকে তখন সূর্যের তেজ প্রশমন ও বৃষ্টি লাভের আশায় কৃষকরা অনেক আগে চৈত্র সংক্রান্তির উদ্ভাবন করেছিলেন বলে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন। গ্রীষ্মের দাবদাহে ভীত কৃষকরা দ্রুত বর্ষার আগমন প্রার্থনায় পুরো চৈত্র মাসজুড়ে উৎসবের মধ্যে সূর্যের কৃপা প্রার্থনা করে।


 

Link copied!

সর্বশেষ :