বাংলাদেশ সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ কেন এয়ারব্রাশ মেকআপ নিয়ে এত আলোচনা?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৪, ০৫:৩৩ পিএম

হঠাৎ কেন এয়ারব্রাশ মেকআপ নিয়ে এত আলোচনা?

আগের দিনে মানুষের সাজের অন্যতম অনুসঙ্গ ছিল ভ্রু সাজানো। এখনও তার ব্যতিক্রম নয়। সাজের সব কিছু ঠিকঠাক হওয়ার পর ভ্রু এলোমেলো থাকলে দেখতে ভালো লাগে না। ভ্রুর সাজ সুন্দর করতে আমরা অনেক উপকরণ ব্যবহার করি। কিন্তু এখন বের হয়েছে এয়ার ব্রাশ কৌশল। শুধু ভ্রুর ক্ষেত্রে নয়, পুরো মেকআপের জন্যই এটি বেছে নিচ্ছেন সাজপ্রিয় মানুষেরা।চলতি বছরের শুরুর দিকে টিকটক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই এই কৌশলটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবং আরও বেশি বেশি ভ্রু ভক্তরা দ্রুত, সহজ, বাজেট-বান্ধব, এবং ব্যথাহীন চিকিত্সার জন্য এটি বেছে নিচ্ছেন।

 এয়ারব্রাশ ভ্রু কি?

এয়ারব্রাশ ভ্রু হলো একটি ক্রমবর্ধমান অ্যাপ্লিকেশন টিনটিং কৌশল যেখানে একটি সূক্ষ্ম-নিয়ন্ত্রিত বাতাস সরাসরি ভ্রুতে স্প্রে করা হয়। সেলিব্রিটি ভ্রু স্টাইলিস্ট এবং ভ্রু কোডের প্রতিষ্ঠাতা মেলানি ম্যারিস বলেছেন, ‘এয়ারব্রাশের নির্ভুলতা পরিষ্কার, সুন্দর লাইন এবং সূক্ষ্ম গ্রেডিয়েন্ট প্রভাবগুলোর সাথে সমানভাবে রঙের, সুন্দরভাবে সংজ্ঞায়িত ভ্রু নিশ্চিত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এয়ারব্রাশ ভ্রুতে আধা-স্থায়ী রঞ্জক স্প্রে করার জন্য একটি ছোট এয়ার ব্রাশিং ডিভাইস ব্যবহার করে, একটি নরম, প্রাকৃতিক চেহারার ভরাট তৈরি করে। অপরদিকে ওমব্রে ব্রাউজ হল আধা-স্থায়ী মেকআপের একটি রূপ যা সাধারণত মাইক্রোব্লেডিং বা মাইক্রোপিগমেন্টেশনের মাধ্যমে অর্জন করা হয়। একটি গ্রেডিয়েন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে ত্বকে ব্যবহার করা হয়, যার ফলে অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী শৈলী হয়।

এয়ারব্রাশ ভ্রু কিভাবে কাজ করে?

প্রথমত, ভ্রুর চারপাশের জায়গাগুলো পরিষ্কার করতে হবে। তারপর ভ্রুগুলোর আকৃতি নির্ধারণ করে ম্যাপিং টেকনিক ফলো করতে হবে। এরপর ভ্রু টেপটি সুরক্ষিত করার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এয়ার ব্রাশের মাধ্যমে অনেক রকম রঙ ব্যবহার করা যোতে পারে। আপনার চুলের সঙ্গে মিলিয়েও ভ্রু সাজাতে পারেন।

এয়ারব্রাশ ভ্রুর সুবিধা কি কি?

এয়ারব্রাশ ভ্রু ত্বকে ১০ দিন এবং ভ্রুতে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। যদিও এটি মাইক্রোব্লেডিংয়ের মতো একটি পরিষেবার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম, যা এক থেকে তিন বছরের মধ্যে স্থায়ী হতে পারে, পরিষেবাটির অস্থায়ী, প্রতিশ্রুতিহীন দিকটি তাদের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে যারা প্রায়শই তাদের চেহারা পরিবর্তন করতে চান।

এটি খুব দ্রুত করা যায়। আপনি কোনো দাওয়াতে বের হওয়ার আগে এটি চট করে ব্যবহার করতে পারেন। এয়ারব্রাশের কৌশলটি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রয়োগের গতি বাড়ায়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, প্রক্রিয়াটি ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে হয়ে যাবে।


কাদের জন্য?

যারা রঙের গভীরতা এবং সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞাসহ একটি পূর্ণ, বিশাল ভ্রু অর্জন করতে চান তাদের জন্য এয়ারব্রাশ পদ্ধতি আদর্শ।মেকআপ জগতের খোলস টাই পালটে দিয়েছে আধুনিক এয়ার  ব্রাশ মেকআপ। স্বাস্থ্য সম্মত এবং বিশ্বের নামীদামী ব্র্যান্ডের ব্যবহারে অত্যন্ত কম সময়ে এয়ার ব্রাশ মেকআপ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।এয়ার ব্রাশ মেকআপ হচ্ছে এমন ধরণের মেকআপ যেখানে মেকআপ ত্বকের উপর আঙুল, স্পঞ্জ অথবা ব্রাশের পরিবর্তে একটি স্প্রে র সাহায্যে ব্যবহার করা হয় । ফাউন্ডেশন থেকে শুরু করে চোখের মেকআপ, ব্লাশ, হাইলাইট এমন কি ক্রিয়েটিভ মেকআপ এর জগতেও পৌঁছে গিয়েছে এয়ার ব্রাশ মেকআপ।

সাধারণত একটি এয়ার ব্রাশ কিট এর তিন থেকে চারটি অংশ থাকে, যেগুলো হচ্ছে এয়ার কমপ্রেসর, ৩-৪ শেডের ফাউন্ডেশন, এয়ার ব্রাশ, ব্যবহারবিধি সম্বলিত সিডি এবং পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস।এয়ার কমপ্রেসর হচ্ছে ছোটখাটো একটি মোটর যা বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে চলে এবং এটি একটি মোটা রাবার টিউবের সাহায্যে এয়ার ব্রাশ এর সাথে যুক্ত থাকে যেখান থেকে ব্রাশ এর বাতাসের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এয়ার ব্রাশে একটি ফানেলের মত অংশ থাকে যাতে মেকআপ প্রডাক্ট ঢালতে হয় এবং ব্রাশের লিভারের সাহায্যে প্রডাক্ট এবং বাতাস দুটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

 ফাউন্ডেশন, আই মেকআপ, ব্লাশ সব কিছুতেই আছে শেডের বিপুল সমাহার। আপনার ত্বক যে বর্ণের, যে ধরনেরই হোক না কেন, শুষ্ক অথবা তৈলাক্ত, ত্বকের ধরন বুঝে বেছে নিতে পারবেন আপনার জন্য উপযুক্ত ফাউন্ডেশন শেডটি। শুধু তাই নয়, যারা বিভিন্ন ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন, যেমন- ব্রণ, রোদে পড়া অথবা হাইপার পিগমেণ্টেশন এমনকি পোড়া দাগ, তাদের কথা মাথায় রেখে আছে স্পেশাল ধরনের ফাউন্ডেশন।

 এয়ার ব্রাশ এর ফাউন্ডেশন সাধারণত ওয়াটার বেজড হয়, যার কারণে এটি ত্বকের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে নিমেষেই শুকিয়ে যায় এবং ত্বকের সাথে মিশে যায়। আর মেকআপের পরও ত্বক দেখায় একদম ন্যাচারাল। এর সাহায্যে প্রতিদিনের মেকআপ থেকে শুরু করে ফুল কভারেজ পার্টী মেকআপ সবই করা যায়, ঢেকে দেয়া যায় নাছোড় বাঁধা দাগ অথবা ব্রণ।

যেহেতু এর প্রয়োগে আঙুল অথবা ব্রাশের প্রয়োজন হয়না, তাই এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত এবং জীবাণূ সংক্রমণের সুযোগও কম। এটি হাইপো এলার্জিক এবং ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করেনা। আর একবার এই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে কোন টাচ আপ ছাড়াই চলে ১০-১২ ঘণ্টা, সম্পূর্ণরূপে ঘাম এবং পানি প্রতিরোধী। এতে সাধারণত ক্ষতিকারক প্যারাবেন এবং সিলিকন না থাকায় স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সম্ভাবনাও কমে যায়। এতোসব গুণের কারণেই বিশ্বব্যাপী মেকআপ আর্টিস্টরা পার্টী মেকআপ থেকে বিয়ের মেকআপ এর জন্য বেছে নিয়েছেন এই এয়ার ব্রাশ টেকনোলজি।

ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি ব্লাশ, চোখের মেকআপ সবই সম্ভব এয়ার ব্রাশের সাহায্যে, শুধু প্রয়োজন অনুশীলন আর টেকনিক আয়ত্ত করা। পুরা কিট ছাড়াও প্রতিটি জিনিস আলাদা আলাদাও কেনা যায়, আর অনেক ব্র্যান্ডই আছে যারা দিচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল শিপিং এর সুবিধা।

 


 

Link copied!

সর্বশেষ :