বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

পানিই নেই, তবুও তিস্তা সেচ প্রকল্পে শত শত কোটি টাকা খরচ!

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ০৯:৪৬ এএম

পানিই নেই, তবুও তিস্তা সেচ প্রকল্পে শত শত কোটি টাকা খরচ!

পানির অভাবে এবারও তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকায় ৩৯ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমি সেচের বাইরে থাকছে। এ প্রকল্পে পানির নিশ্চয়তা না থাকলেও প্রায় ১৫শ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্প সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। তবে পানির ন্যায্যতা নিশ্চিত ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া বিপুল পরিমাণ এ অর্থ খরচ করাকে কেবল অপচয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানির অভাবে ধুকছে উত্তরের প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম অবলম্বন প্রমত্তা তিস্তা। বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ গড়ে ২ লাখ কিউসেক থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে গড়ে থাকে ২ হাজার কিউসেক। তবে কোনো কোনো সময় তা নেমে আসে ৫০০ কিউসেকে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের জনজীবন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও প্রতিবেশ।


অথচ তিস্তার পানির ওপর নির্ভর করেই ১৯৯০ সালে প্রথম দফায় কাজ শেষ হবার পর ৮৪ হাজার ৩৭৮ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কখনই কাঙ্খিত সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। যার মূল কারণ শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য তিস্তা।রংপুর তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, মূল কথা ছিল নদীটা তারা ড্রেজিং করবে, চ্যানালে সংযুক্ত, গভীর ও জলাধারা নির্মাণ করবে। এছাড়া তিস্তার শাখা নদীগুলোর সঙ্গে সংযোগ ফিরিয়ে আনবে।
 তিস্তায় পানি না থাকলে এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী -- এমন প্রশ্নে উত্তরাঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ওভারকাম করার জন্য যতোটুকু পারা যায় আমরা তা করবো। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ড্রেজিংয়ের টার্গেট নিয়েছি। যেখানে নদী ৪-৫ কিলোমিটার বিসৃত আছে সেখানে আমরা সেটা ১৬শ মিটারে নিয়ে আসবো। এ পরিকল্পনার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কিছুটা হয়তো ফিরে পাবো।

এ বিষয়ে রিভারাইন পিপলসের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিস্তার পানি নিশ্চিত করা না হলে তিস্তা সেচ প্রকল্পের পিছনে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, তা কোন কাজে আসবে না।


তিনি আরও বলেন, ‘এটা একটা অপরিকল্পিত কাজ। তিস্তা সেচ প্রকল্প বৃদ্ধির কাজ করা হচ্ছে; এটাতো শুভঙ্করের ফাঁকি। কারণ এখানে পানি কোথায়? এক খাল সংস্কারের ভিতর দিয়ে যে ধান উৎপাদনের উৎসাহিত করা হচ্ছে বা যে জমিগুলো ভুট্টা হতে পারে, মরিচ ও আলু হতে পারে। আমাদের এসব কাজে উৎসাহিত করতে হবে।তিস্তা সেচ প্রকল্প সম্প্রসারণ ও সংস্কার প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ শেষ হলেও পানির অভাবে বাড়াতে পারেনি প্রকল্পের পরিধি। সে কারণেই প্রশ্ন ওঠছে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কিংবা পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত না করে এ প্রকল্পে এতো টাকা ঢালাটা কী কাজে আসবে!

 

 


 

Link copied!

সর্বশেষ :