বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাকৃতিক লাঙল কেঁচো ভালো নেই

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম

প্রাকৃতিক লাঙল কেঁচো ভালো নেই

প্রাকৃতিক লাঙল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কেঁচো। ফসল চাষ, মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধিসহ ছোটখাটো অনেক পাখি ও প্রাণীর আহার হিসেবে কেঁচোর গুরুত্ব অনেক। অনেক পাখির খাদ্যশৃঙ্খলে কেঁচো গুরুত্বপূর্ণ। কেঁচো মাটিতে জৈব পদার্থকে ভেঙে ফেলে যেন মাটির অন্যান্য জীব সেই পদার্থ ব্যবহার করতে পারে। মাটিতে কেঁচো ক্ষুদ্রাকৃতির টানেল তৈরি করে, যা মাটির অভ্যন্তরে বাতাস ও পানির প্রবাহ নিয়ে যায়। কেঁচো মানুষের খাদ্যব্যবস্থার ভিত্তির সঙ্গে যুক্ত মাটির ওপরের অংশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভূত্বকের ওপরের অংশ প্রায় ৯৫ শতাংশ খাদ্যশস্য ও ফসল জন্মায়।

জলবায়ু পরিবর্তন আর মাটিদূষণের কারণে সারা বিশ্বে কেঁচোর সংখ্যা কমছে। ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ২৫ বছরে কেঁচোর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে। এতে মাটির স্বাস্থ্য, বাস্তুতন্ত্রের গঠন ও কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কেঁচোর সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি জীববৈচিত্র্যের জন্য সবচেয়ে বড় ও অন্যতম হুমকির সম্ভাবনা বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

ট্রেন্ডস ইন ইকোলজি অ্যান্ড ইভল্যুশন সাময়িকীতে কেঁচোর কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী আইলিধ বার্নস বলেন, ‘সমুদ্র, মিঠাপানি ও স্থলভাগে বড় আকারের বন্য প্রাণী কমে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা চলছে। মাটির নিচে কী ঘটছে, তা নিয়ে গবেষণা বেশ কম হচ্ছে। যেসব পাখি কেঁচো খায়, সেসব পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। মাটির নিচের কীটের অবস্থা জানার চেষ্টা করি আমরা। শুধু যুক্তরাজ্যে কেঁচোর সংখ্যা বছরে ২ শতাংশ করে কমছে। অন্য দেশেও একইভাবে কেঁচোর সংখ্যা কমছে। জলবায়ু সংকটের কারণে মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে, এতে কেঁচোর প্রজাতি ধ্বংস হচ্ছে।’

কেঁচোর যে ক্ষতি হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বনভূমির পরিবেশকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে। কেঁচো মাটির রাসায়নিক পুষ্টির পুনর্ব্যবহার ও উর্বরতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যাপকভাবে পানিনিষ্কাশন, কীটনাশক ব্যবহার ও অজৈব সার ব্যবহারের কারণে কেঁচো ঝুঁকির মধ্যে আছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বিভিন্ন সবজি চাষ, ফলের বাগানের কারণে কেঁচোর সংখ্যা কমছে। আঙুরের বাগানের কারণে দক্ষিণ আমেরিকা, পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে কেঁচোর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।

Link copied!

সর্বশেষ :