বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ভাগ্যে জুটেনি বিশুদ্ধ পানি

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ভাগ্যে জুটেনি বিশুদ্ধ পানি

প্রতিদিন প্রায় আধা ঘণ্টা পাহাড়ি পথ হেঁটে মৃত ছড়ার খোঁড়া ছোট গর্ত থেকে মগ বা বাটিতে পানি তুলে কলসি ভরার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় রি মা আমিয়াগ্রি দুঃখ্যাদের। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও তাদের ভাগ্যে জুটেনি সুপেয় পানি ও ডিপ টিউবওয়েল।রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডস্থ নোয়াপাড়া মারমা পাড়া অধ্যুষিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির হাহাকার দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খাবার পানি, ধোয়ামোছা এবং গোসলের পানির জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় প্রাকৃতিক উৎস পাহাড়ি ঝর্ণা, ছড়া ও বিকল্প গর্তে উঠা পানির ওপর। অপর দিকে শুষ্ক মৌসুম অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত অধিকাংশ ঝর্ণার পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পানি সংগ্রহ করতে হয় পাহাড়ি ছড়ার ময়লাযুক্ত ঘোলা পানি, কিংবা টিলার নিচে তৈরি অগভীর গর্ত থেকে। অগভীর কুয়ায় চুপসে - চুপসে এসে জমা পানি বাটিতে করে তুলে কলসি ভরাতে হয়৷  তার আগে দীর্ঘ লাইনে থাকতে হয়, অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। এভাবেই নিত্যদিনের পানি সংগ্রহে রীতিমতো সংগ্রাম চলে নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের।


বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় দুর্ভোগের শিকার নোয়াপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আইয়েমা মারমা, সাজাই কারবারি, কান্দুরা মারমা, লাছাই মারমা,নাইসা ছিং মারমা বলেন, প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিনিট পাহাড়ি পথ হেঁটে পানি আনতে যেতে হচ্ছে মৃত ছড়ার খোঁড়া ছোট একটি গর্তের কাছে। গর্ত থেকে ধীরে ধীরে পানি বের হয়। সেই পানি বাটিতে তুলে একটু একটু করে কলসি ভরে নিজ নিজ বাড়িতে পানি বহন করে নিতে হয়।
এক কলসি পানি নিয়ে প্রশান্তির হাসি হেসে মারমা ভাষায় রি মা আমিয়াগ্রি দুঃখ্যা বললেন, বেশি কষ্ট, পানির কষ্ট। শীতকাল থেকে পাহাড়ে শুরু হয় পানির কষ্ট। পানীয় জল, ধোয়ামোছাসহ নিত্য দিনের কাজের পানির আকাল থাকে বর্ষার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে এ ছয় মাস। খাওয়ার পানির এই কষ্ট দীর্ঘ  ৫৩ বছর যাবত চলছে নোয়াপাড়া গ্রামে।

দুর্ভোগের শিকার নোয়াপাড়া এলাকাবাসী সময় সংবাদকে জানান, নিজেদের উদ্যোগে টাকা খরচ করে রিং টিউবওয়েল এবং কুয়া স্থাপন করলেও পানিতে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ থাকার কারণে ব্যবহার অনুপযোগী। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি। তারা আরও বলেন, নালা নর্দমা থেকে নেমে আসা ও ছড়ার ময়লাযুক্ত পানিই কাপড় দিয়ে ছেঁকে পান করতেন। কিন্তু এখন সেই সুযোগও পান না। সেই ছড়ার পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। 

এ ব্যাপারে ৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চিরনজিত তনচংগ্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি নোয়াপাড়াবাসী পানির কষ্টে আছেন বলে স্বীকার করেন এবং এই সমস্যা দূরীকরণে গত কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের আবেদনের মাধ্যমে অবহিত করেন, আগামীতে নোয়াপাড়া এলাকায় পানির কল দেয়ার চিন্তা চলছে।

অপর দিকে জন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কাপ্তাই উপ সহকারী প্রকৌশলী লিমন চন্দ্র বর্মণ এ বিয়য়ে কথা বলতে অপারগতা জানান।

Link copied!

সর্বশেষ :